নিউজ ডেস্ক:
মহামারি করোনা ভাইরাসের মধ্যে রাজধানীর অধিকাংশ গণপরিবহন স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলাচল করছে। পাশের সিট ফাঁকা রেখে যাত্রী বসানোর কথা থাকলেও সে নিয়ম মানছেন না চালক-হেলপার। পরিস্থিতি ঠিক আগের মতোই। অথচ যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া ঠিকই আদায় করা হচ্ছে। এ নিয়ে হেলপার ও যাত্রীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি দেখা যাচ্ছে প্রায়ই। যাত্রী পাশের সিট ফাঁকা রাখার ব্যাপারে সচেতন হলেও উপায় নেই। এসবের তোয়াক্কাই করেন না হেলপাররা।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন রুটের পরিবহনে এমন দৃশ্য দেখা যায়। সরেজমিনে দেখা যায়, বিহঙ্গ পরিবহন, বাহন পরিবহন, সাভার পরিবহন, শিকড় পরিবহন, বিআরটিসি, ওয়েলকাম পরিবহন, নিউ ভিশন পরিবহনসহ বিভিন্ন পরিবহনে শারীরিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না। পাশের সিট ফাঁকা রাখা হচ্ছে না। কোনো কোনো পরিবহনে এক সিট ফাঁকা রাখা হলেও আবার যাত্রীদের দাঁড়িয়ে থাকতে গেছে। এছাড়া যাত্রীদের একটা অংশকে মাস্ক ছাড়াই চলাচল করতে দেখা যায়। একইসঙ্গে কিছু বাসের ড্রাইভার এবং হেলপারদেরও মাস্ক ছাড়া দেখা যায়। বিহঙ্গ পরিবহনে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ায় যাত্রীদের সঙ্গে হেলপারের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হতেও দেখা যায়।
বিহঙ্গ পরিবহনের হেলপারের কাছে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা না বলেই চলে যান। নিউ ভিশন পরিবহনের হেলপারের মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে তিনি পকেটে মাস্ক রয়েছে বলে জানান।
ওয়েলকাম পরিবহনে মতিঝিলের উদ্দেশে যাওয়া যাত্রী কামাল হোসেন বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে বাসের মধ্যে শারীরিক দূরত্ব বজায় এবং স্বাস্থ্যবিধি যেন মেনে চলা হয়, সে কারণে সরকার অতিরিক্ত ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়েছে। কিন্তু বাসের মধ্যে এগুলোর কোনো কিছুই মানা হচ্ছে না। এগুলো দেখার জন্য কোনো লোকও নেই। তাই পরিবহন মালিক এবং শ্রমিকরা তাদের ইচ্ছে মতো ভাড়া আদায় করলেও আমাদের করার কিছু নেই। বাসে চলাচলকারী অধিকাংশ যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অতিরিক্ত ৬০ শতাংশ ভাড়া দিয়ে তাদের যাতায়াতে কষ্ট হলেও শারীরিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য এটা দিতে তাদের আপত্তি নেই। কিন্তু যদি বাসের মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব বজায় না রাখার হয়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা না হয়, বাসের মধ্যে নিয়মিত জীবাণুনাশক স্প্রে করা না হয়, তাহলে কেন শুধু শুধু অতিরিক্ত এ ভাড়া নেওয়া হবে।
অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার কারণে যাত্রীদের যেসব সুবিধা দেওয়ার কথা তা দেওয়া হোক। না হলে আগের ভাড়া নেওয়া হোক! এ ছাড়া এসব বিষয় তদারকি করার জন্য তেমন কোনো উদ্যোগেরও দেখা নেই। বাস যাত্রীদের দাবি, বাসের মধ্যে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি এবং নিয়মকানুন মেনে চলার ব্যবস্থা করার জন্য প্রয়োজনীয় তদারকির ব্যবস্থা করা হোক। এ ছাড়া স্বাস্থ্যবিধি এবং নিরাপদ দূরত্ব বজায় না রাখলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ করা হোক।