JAFB | Journalist Alliance Foundation of Bangladesh
অর্থনীতি ফোকাস নিউজ রংপুর

চরে আবাদ করে সোনালী স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
এক কালের খরস্রোতা তিস্তা নদী উত্তরের জেলা রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এখন প্রায় পানি শুন্য কংকালসার ধু-ধু বালু চর তিস্তা নদীর বুক জুড়ে সবুজের সমারোহ, ফলনও ভালো। তিস্তা নদীর বুক চিরে বিষমুক্ত সবজি চাষ করে নতুন সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। উপজেলার তিস্তা নদী বেষ্টিত জেগে ওঠা চরাঞ্চলের জমিতে নিরাপদ মিষ্টি কুমড়াসহ নানা জাতের সবজি চাষ করে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। চাষীরা বলছেন ‘চরের আবাদ হামার ভাগ্য বদলে দিছে।’

উপজেলা কৃষি দপ্তরের সূত্রমতে, চলতি মৌসূমে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে নিরাপদ মিষ্টি কুমড়া চর স্থাপন প্রকল্পের আওতায় তিস্তা নদীর জেগে ওঠা চরাঞ্চলে অন্ততঃ ১শ’ একর জমিতে বিষমুক্ত মিষ্টি কুমড়াসহ নানা ধরণের সবজি চাষ করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, ইতোমধ্যে তিস্তার জেগে ওঠা চরে চাষাবাদ করে সাবলম্বী হয়েছেন অনেক কৃষক। তাদের সংসারেও ফিরে এসেছে আর্থিক স্বচ্ছলতা।

সরেজমিনে উপজেলার তিস্তা নদী বেষ্টিত চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে চর নাজিরদহ, চর পল্লীমারী, চর চতুরা, প্রাণনাথ চর, বল্লভবিষু, চর সাব্দী, গোপীডাঙ্গা, চর পাঞ্জরভাঙ্গা, চর গদাই, চর ঢুষমাড়া, পূর্ব নিজপাড়া, চর গনাই, চর হয়বৎখাঁ, চর আজমখাঁ, চর রাজীব এলাকার তিস্তা নদীর বালু চরে শোভা পাচ্ছে মিষ্টি কুমড়াসহ নানা জাতের শস্য। এসব চরের চাষীরা আলু, গম, বাদাম, সরিষা, রসুন, পিয়াজের পাশাপাশি ব্যাপক ভাবে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছেন। তিস্তার চরাঞ্চলে পলি ও উর্বর দো-আঁশ মাটিতে মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন ও অধিক দাম পাওয়ার আশাও করছেন চাষীরা ।

গাজিরহাট এলাকার সবজি চাষী রতন চন্দ্র জানান, উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে জেগে ওঠা ধু-ধু বালুর চরে গতবার ২শ’ গর্তে বিষমুক্ত মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছিলেন। তাতে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকার মতো পেয়েছেন তিনি। এবারে প্রায় ২ হাজার ৪শ’ গর্তে মিষ্টি কুমড়ার বীজ বোপন করেছেন, প্রয়োজনীয় সার-কীটনাশক ও পরিচর্যার কারণে তার ক্ষেতের ফলন ভালো হয়েছে।

অন্যদিকে কৃষানী অষ্টমী বালা বলেন, ‘তিস্তা নদী হামার গুলার জমি-জিরাত, বাড়ি-ভিটা সউগ নিছে। এলা নদীর ভাসা চরত কৃষি অফিসের বুদ্ধি শুনিয়া কাশিঁয়াবাড়ি চোটেয়া মিষ্টি কুমড়া, আলু, গম, বাদাম, সরিষা, রসুন, পিয়াজ আবাদ করি লাভ পাবার নাগছি। চরের আবাদ হামার ভাগ্য বদলে দিছে।’ একই অভিব্যক্তি স্থানীয় ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম, যীতেন্দ্র নাথ, তুহিন মিয়া, দুলাল হোসেনসহ অনেকেই। তারা বলছেন, চর এখন আর অভিশাপ নয় হয়ে উঠেছে সবুজের আর্শিবাদ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল আলম জানান, উপজেলার চর গুলো এক সময় অনাবাদি থাকতো। জেগে ওঠা চরে নারী-পুরুষ মিলে মিশে ঘাম ঝড়িয়ে মিষ্টি কুমড়াসহ নানা রকমের সবজি চাষ করে দারিদ্রকে জয় করেছেন কৃষকেরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং পরিশোধীত বীজ, প্রয়োজনীয় সার-কীটনাশক পাওয়ায় মিষ্টি কুমড়ার বেশ ভালো ফলনের আশা করা হচ্ছে। তিস্তা নদীর জেগে ওঠা চরের জমিতে প্রচুর পলি পড়ায় মাটির প্রকৃতি ও আবহাওয়া নিরাপদ মিষ্টি কুমড়াসহ অন্যান্য সবজি চাষের জন্য উপযোগী। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের মানুষের মাঝে জেগে ওঠা চরাঞ্চলে উৎপাদিত নিরাপদ মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন জাতের সবজি সরবরাহের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

এই সংক্রান্ত আরও খবর

প্রবীণ সাংবাদিক শাহজাহান মিয়ার মৃত্যুতে বাসাজ’র শোক

Shahadat Hossen

মাসে ১০ কোটি করে পদ্মার বকেয়া পরিশোধে রাজি বিমান

Shahadat Hossen

আফগানিস্তানফেরত ফখরুল হাল ধরেন হুজির, ছিল বড় হামলার পরিকল্পনা

Shahadat Hossen

ট্রেনে কাটা পড়ে মা-মেয়ের মৃত্যু

Shahadat Hossen

কুমিল্লায় ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে দুজনের মৃত্যু

Shahadat Hossen

মহারাষ্ট্রে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ১১

Shahadat Hossen