JAFB | Journalist Alliance Foundation of Bangladesh
Uncategorized সারাদেশ

শেরপুরে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল আহসানের ম্যুরাল উন্মোচন

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে ঐতিহাসিক কাটাখালী ব্রীজ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল আহসানের ম্যুরাল উন্মোচন করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে শেরপুরের জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার ম্যুরালটির উন্মোচন করেন।

প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ভিসি পতি প্রকৌশলী নাহিদ নেওয়াজ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মুকতাদিরুল আহমেদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার নুরুল ইসলাম হীরু, ঝিনাইগাতী উপজেলা চেয়ারম্যান আলহ এস‌এম‌এ ওয়ারেজ নাইম, স‌ড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান, ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. ফারুক আল মাসুদ, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মু্ক্তিযোদ্ধা এড. মুখলেছুর রহমান আকন্দ প্রমুখ।

উল্লেখ্য ১৯৭১ সালের ৬ জুলাই রাতে ‘অপারেশন কাটাখালি’ পরিচালনা করে সফলভাবে ব্রীজটি ধ্বংস করে ফেলার পথে রাত শেষ হয়ে যাওয়ায় পার্শ্ববর্তী রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে আশ্রয় নেন বীর মুক্তিযোদ্ধাগন। ঐ গ্রামের জালাল মিস্ত্রী পাক বাহিনীর স্থানীয় হেড কোয়ার্টার আহাম্মদনগর ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের খবরটি পৌঁছে দেয়। সংবাদ পেয়ে তিনদিক থেকে গ্রামটিকে ঘিরে ফেলে পাক সেনারা। এর পর শুরু হয় প্রচণ্ড যুদ্ধ। সেখানেই সম্মুখ সমরে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কৃতি শিক্ষার্থী অপারেশন কমান্ডার নাজমূল আহসান এবং তাঁর পরিবারের অপর দুই মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন ও আলী হোসেন সহ শহীদ হন ১২ জন। এরপর পাক বাহিনী রাঙ্গামাটি গ্রামে হানা দেয়। খুঁজে খুজেঁ বের করে ৬০/৭০ জন গ্রামবাসীকে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করলে ঘটনাস্থলেই ৯ জন শহীদ হন। এছাড়া গ্রামের বেশ কয়েকজন নারীর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায় পাক হানাদার বাহিনী।

স্থানীয়দের দাবির মুখে ২০১৭ সালে পুরোনো সেতুটিকে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয় জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যেই সেতুটির সংস্কার কাজ সম্পন্ন করেছেন শেরপুর সড়ক বিভাগ। সেইসাথে শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণে নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন স্মৃতিসৌধ। পাশাপাশি কাটাখালি ব্রীজ অঙ্গনে স্বাধীনতা উদ্যান প্রতিষ্ঠা ও ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে রাখতে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, শেরপুর-ঝিনাইগাতী- নালিতাবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কে কাটাখালী ব্রিজটি পারি দিয়ে ঝিনাইগাতী উপজেলার আহাম্মদ নগরে ১১ নং সেক্টরের বিপরীতে পাক আর্মির হেডকোয়ার্টারে যেতে হতো। এছাড়াও কোয়ারিরোড, রাংটিয়া পাতার মোর, নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাও ও নালিতাবাড়ী এবং ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার অনেকগুলো ক্যাম্পের সাথে যোগাযোগ ও সরবরাহ ব্যবস্থার একমাত্র পথ ছিল এটি। কাটাখালী ব্রিজটি ধ্বংস করতে মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি অভিযান ব্যর্থ হয়। অবশেষে ১৯৭১ সালের ৫ জুলাই রাতে পরিকল্পনা অনুযায়ী কোম্পানি কমান্ডার নাজমূলের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ডিনামাইট ফিট করে কাটাখালি ব্রিজটি উড়িয়ে দিতে সক্ষম হন। এর ফলে ১১ নং সেক্টরের বিপরীতে পাক আর্মির হেডকোয়ার্টার আহাম্মদনগর ক্যাম্প সহ ভারতের মেঘালয় সীমান্ত এলাকায় অনেকগুলো ক্যাম্পের সাথে পাক আর্মির যোগাযোগ ও সরবরাহ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে উল্লেখযোগ্য এলাকার যুদ্ধ পরিস্থিতি বদলে যায়।

স্বাধীনতা অর্জনের পর শহীদ নাজমুলের নামে ময়মনসিংহ কৃষি বিদ্যালয়ে একটি হল, নালিতাবাড়ীতে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে শহীদ নাজমুলকে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ‘অপারেশন কাটাখালি’ ও রাঙ্গামাটিয়া যুদ্ধের সরকারি স্বীকৃতি মিলেছে। ইতোমধ্যে রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের তিনজন নারীকে সরকার বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়েছে।

এই সংক্রান্ত আরও খবর

২৩ কেজি ওজনের এক মাছের দাম ৮ লাখ টাকা!

Shahadat Hossen

নোয়াখালীতে শীতার্তদের ব্যতিক্রমী উপহার ও শীতবস্ত্র বিতরণ

Shahadat Hossen

পুলিশ পরিদর্শক থেকে বিসিএস ক্যাডারের এএসপি হলেন ৪০ জন

Shahadat Hossen

শ্রীপুর সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান মাতালেন কণ্ঠশিল্পী মনির খান ও মেরি

Shahadat Hossen

ধামরাইয়ে গ্যাস থেকে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত বেড়ে ৪

Shahadat Hossen

রাঙ্গুনিয়ায় বড় ভাইকে না পেয়ে ছোট ভাইকে হত্যা

Shahadat Hossen

Leave a Comment