নিউজ ডেস্ক:
প্রাইভেট কোম্পানি খুলে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার ১১ জনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদের আদালতে (ভার্চুয়াল) তাদের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
জামিন না হওয়া ১১ আসামি হলেন- ইসমাইল হোসেন (২৯), নাজমুল হাসান (২৯), জাবেদ হোসেন (২৮), ইউসুফ (৪৫), তানিয়া সুলতানা (২৯), ফাতেমাতুজ জোহরা (৩৪), রাবেয়া আক্তার বিথি (২৩), অনামিকা আক্তার (২৬), সানজিদা আক্তার (২৪), শামীম আহম্মেদ (৩১) ও মো. মাহিম (২১)। এর আগে মঙ্গলবার জামাল হোসেন ইমন ওরফে মনিরুজ্জামান (৪৫) ও খালেদ নুরের (৩৬) দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। অপরদিকে গ্রেফতার বাকি ১৮ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন এ আদেশ দেন। এ দিন তাদের ২০ জনকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। কাফরুল থানায় প্রতারণার মামলায় জামাল ও খালেদকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ।
অপরদিকে বাকি ১৮ জনকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে বিচারক দুজনের দুদিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন এবং বাকি ১৮ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। প্রতারণার শিকার বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব-১১ এর একটি দল সোমবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ঢাকার কাফরুল থানাধীন ডিওএইচএস মহাখালী এলাকার গাজী ইন্টারন্যাশনাল ও ভিশন বিজনেস সেন্টার নামের দুটি অফিস কক্ষে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। আটকরা হলেন- জামাল হোসেন ইমন ওরফে মনিরুজ্জামান (৪৫), খালেদ নুর (৩৬), ইসমাইল হোসেন (২৯), নাজমুল হাসান (২৯), হাসান মুনমুন (৩৪), জাবেদ হোসেন (২৮), আরিফ হোসেন (২২), ইউসুফ (৪৫), খোরশেদ আলম (৪৫), ফাতেমাতুজ জোহরা (৩৪), রাবেয়া আক্তার বিথি (২৩), জ্যোতি আক্তার (১৯), অনামিকা আক্তার (২৬), তানিয়া সুলতানা (২৯), অন্তরা খাতুন (২৫), সানজিদা আক্তার (২৪), আলমগীর (২৯), মীর সানবিরুল আলম (২৭), শামীম আহম্মেদ (৩১) ও মো. মাহিম (২১)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৫১টি চাকরির আবেদনপত্র, গাজী ইন্টারন্যাশনাল ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের সিল, রিক্রুটিং অফিসারের সিল, ভিশন বিজনেস সেন্টার নামীয় সিল, আইডি কার্ড, ল্যাপটপ, বিপুল পরিমাণ ভুয়া চাকরির বিজ্ঞাপন, ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের রশিদ ও নিবন্ধন ফরমসহ নগদ অর্থ জব্দ করা হয়।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কাউসার আহমেদ নামে একই ব্যক্তির নামে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন থেকে ‘গাজী ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড’ ও ‘ভিশন বিজনেস সেন্টার’ নামে দুটি ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে মহাখালীর ডিওএইচএস এলাকায় দুটি অফিস খোলে। বিভিন্ন পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি ফেসবুক, অনলাইন ও লিফলেটের মাধ্যমে প্রচার করে। কোম্পানির ইউনিট ম্যানেজার, ব্রাঞ্চ ম্যানেজার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার প্রভৃতি পদে ২০-৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে তরুণ-তরুণীদের প্রলুব্ধ করে।
চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে আবেদন ফি বাবদ এক হাজার টাকা ও প্রশিক্ষণ বাবদ ৮-১২ হাজার টাকা করে নেয়। মাসের পর মাস বেতন দেয়নি। দুই প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। তবে চাকরি পাওয়ার পর মাসের পর মাস অফিসে আসা-যাওয়া করে বেতন না পেয়ে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে অনেকে টাকা ফেরত চাইলে বিপত্তি বাধে। তাদের মারধর, কখনও ভয়-ভীতি দেখিয়ে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেয়া হয়।