নিউজ ডেস্ক:
ছাত্রদের বিক্ষোভের মুখে এবার হাটহাজারী দারুল উলুম মাদ্রাসার মহাপরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগ করলেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী। বুধবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া ছাত্রদের বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে দ্বিতীয়বারের মতো বৈঠকে বসে মাদ্রাসার মজলিশে শূরা কমিটি। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলা ওই বৈঠকে পদত্যাগ করেন শাহ আহমদ শফী।
প্রসঙ্বগত কিছুদিন ধরে শফীপুত্র আনাস মাদানীর বিরুদ্ধে ক্ষমতা অপব্যবহারের নানা অভিযোগ ওঠে। যার শিকার হন মাদ্রাসার ছাত্ররাও। তারাই গত বুধবার মাদ্রাসায় ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায়৷। তারা ভাঙচুরও করে৷ আনাস মাদানীর অনুসারী এক শিক্ষক তাদের হাতে প্রহৃতও হন। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে সুরা সদস্যরা বৈঠক করে আনাস মাদানীকে মাদ্রাসার শিক্ষক পদ থেকে বহিষ্কার করেন।
ছাত্ররা মোট পাঁচ দফা দাবি দিয়েছে। দাবিগুলো হলো- মাওলানা আনাস মাদানীকে অনতিবিলম্বে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করতে হবে, ছাত্রদের প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান ও সবধরনের হয়রানি বন্ধ করতে হবে, আল্লামা আহমদ শফী অক্ষম হওয়ায় মহাপরিচালকের পদ থেকে সম্মানজনকভাবে অব্যাহতি দিয়ে উপদেষ্টা বানাতে হবে, উস্তাদদের পূর্ণ অধিকার ও নিয়োগ-বিয়োগকে শূরার কাছে পূর্ণ ন্যাস্ত করতে হবে, বিগত শূরার হাক্কানি আলেমদেরকে পুনর্বহাল ও বিতর্কিত সদস্যদের পদচ্যূত করতে হবে। এর মধ্যে বুধবার প্রথম দাবি মেনে আনাস মাদানীকে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করে ছাত্রদের শান্ত রাখা হয়। বৃহস্পতিবার সম্মানজনকভাবে পদত্যাগ করেন আল্লামা শফী। এছাড়াও অন্যান্য দাবির ব্যাপারেও তারা অনড় রয়েছে বলে জানা গেছে।
মজলিশে শূরা সদস্য আল্লামা সালাউদ্দিন নানুপুরী বলেন, অসুস্থতার কারণে আল্লামা শাহ আহমদ শফী হুজুর স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। তিনি তার দায়িত্ব (মহাপরিচালক) শূরার ওপর অর্পণ করেছেন। শূরা সদস্যরা পরবর্তীকালে মহাপরিচালকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। বৈঠকে আরও দুটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। হুজুর জীবিত থাকা অবস্থায় সবসময় দারুল উলুমের উপদেষ্টা হিসাবে থাকবেন। মাদ্রাসার শিক্ষক আল্লামা নুরুল ইসলাম জাদিদকে আজীবনে জন্য মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সভায় শূরা সদস্যদের মধ্যে মেখল মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা নোমান ফয়েজী, নানুপুর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা সালাহউদ্দীন নানুপুরী ও মাওলানা ওমর ফারুক, মাওলানা আহমেদ দিদার, মাওলানা ফোরকান আহমেদ, মাওলানা বশির আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।